Recent Posts

প্রযুক্তির মানুষ অ্যাপেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী স্টিভ জবস


আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় সহজ আর গতিশীল করতে অনেকেরই অবদান চিরস্মরণীয়। তাদের মধ্যে একজন টেক গ্যাজেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী স্টিভ জবস। কম্পিউটার থেকে মোবাইল—জবসের অবদানেই পাল্টে গেছে প্রযুক্তি দুনিয়ার চিত্র।

১৯৫৫ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করা জবস বেড়ে ওঠেন পালক পিতা-মাতা আবদুল ফাত্তাহ জান্দালি এবং জোয়ান সিম্পসনের ঘরে। ২৭ বছর বয়সে তিনি জানতে পারেন তাকে দত্তক নেয়া হয়েছিল। মাধ্যমিক স্কুলে থাকাকালীনই তার ইলেকট্রনিকসের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। ১৯৬৯ সালে তার পরিচয় হয় দ্বিতীয় স্টিভ, অর্থাৎ স্টিভ ওজনিয়াকের সাথে। দু’বন্ধু মিলে ১৯৭৬ সালে কম্পিউটার ব্যবসা শুরু করেন। নাম দেন অ্যাপেল।

৪ বছরের মাথায় ১৯৮০ সালে ২৫ বছর বয়সী জবস যখন ব্যবসায়িকভাবে অ্যাপেলের কম্পিউটার বাজারে আনেন, তখন তাদের নিট মূলধন ২০০ মিলিয়ন ডলার। প্রযুক্তি দুনিয়ায় সূচিত হয় নতুন এক বিপ্লবের।

তারপরই হঠাৎ ছন্দপতন। ব্যক্তিজীবনের নানা উত্থান-পতন এবং কর্মক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতায় জবসের অ্যাপেল থ্রি এবং ম্যাকিন্টশ কম্পিউটারের প্রোজেক্ট বাজারে ফ্লপ হয়। নিজের গড়া কোম্পানী থেকেই বহিষ্কৃত হন জবস। এরপর ১৯৮৩ সালে নিজেই নেক্সট কম্পিউটার নামে একটি নতুন কোম্পানি গড়ে তুললেও তার “নেক্সট কিউব ” আইডিয়া জনপ্রিয় হয়নি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি।

“নেক্সট কিউব” চালু করার এক বছর পর ১৯৮৬ সালে জবস লুকাস ফিল্মসের গ্রাফিক্স ডিপার্টমেন্ট ‘দ্য গ্রাফিক্স গ্রুপ’ কিনে নেন। তিনি এর নাম পরিবর্তন করে ‘পিক্সার’ রাখেন। ১৯৯১ সালে পিক্সার স্টুডিও ডিজনির সাথে একটি চুক্তি সই করে। এই দুই স্টুডিওর মিলিত ব্যানারেই ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার দ্বারা তৈরি অ্যানিমেশন মুভি ‘টয় স্টোরি’, যা বক্স অফিসে ব্যাপক সাড়া জাগায়। এই ছবিটি মুক্তির পর স্টিভ জবস, যিনি কিনা পিক্সারের ৮০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন, ১.৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের নেট সম্পদের মালিক বনে যান।

যে অ্যাপেল থেকে স্টিভ জবসকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, সেই অ্যাপেলই তাকে সসম্মানে আবার ফিরিয়ে নেয় ১৯৯৬ সালে। নতুন করে নিয়োগ পাওয়ার তিন বছরের মাথায় ২০০০ সালের জানুয়ারি থেকে জবস অ্যাপেলের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। আর তারপরেই তার হাত ধরে প্রযুক্তিজগতে সৃষ্টি হয় ইতিহাস। ১৯৯৮ সালে আইম্যাক বাজারে আসার পর পার্সোনাল কম্পিউটারের জগতে সৃষ্টি হয় বিপ্লব। ২০০১ সালে অ্যাপেল তাদের আইপড থেকে অবিশ্বাস্য সাড়া পায়। ২০০৩ সালে অ্যাপেল আইটিউনস মিউজিক স্টোর উদ্বোধন করে সঙ্গীত জগতে সাড়া ফেলে। সম্ভবত আইফোনই অ্যাপেলের সবচেয়ে মৌলিক এবং বৈপ্লবিক উদ্ভাবন। ২০০৭ সালে অ্যাপেল আইফোনের মাধ্যমে এক সাথে একটি কম্পিউটার, একটি আইপড এবং একটি মোবাইল ফোন পৌছে দেয় মানুষের পকেটে।

২০০৩ সালেই ধরা পড়েছিল জবসের অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার। প্রথমে ব্যাপারটা গুরুত্ব না দিলেও শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা করান তিনি, মাঝখানে ভালো ছিলেন অনেকটা সময়। কিন্তু ২০১১ সালের শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে সিইওর পদ থেকে অবসর নেন তিনি। মাত্র দুই মাস পরেই ৫ই অক্টোবর ৫৬ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজ বাড়িতে মারা যান এই কীর্তিমান মহাপুরুষ।

নশ্বর দেহখানি বিদায় নিলেও স্টিভ জবস বেঁচে আছেন, থাকবেন তার কর্মে, প্রতিভায়, নিষ্ঠায়। অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে।

Comments

Popular posts from this blog

How to do Velocity Edit on CapCut

Asus ROG Phone 6D Ultimate price in Bangladesh 2022 & Specifications

Tip Tip Barsa Paani Trending Capcut Template Download link TikTok