ব্লগিং কি? কিভাবে কোথা থেকে ব্লগিং শুরু করবেন? বিস্তারিত জানুন ব্লগিং সম্পর্কে
ব্লগিং কি? কিভাবে কোথা থেকে ব্লগিং শুরু করবেন? বিশেষ করে নতুনদের মাঝে এই প্রশ্নগুলো আসে। এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা স্পেশালি যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চান তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে একটি কাজ শুরু করার পূর্বে যদি একাজ সম্পর্কে ভালোভাবে না জানেন তাহলে কাজটি ভালোভাবে করতে পারবেন। এজন্য যে কাজটি করতে যাবেন এই কাজটি সম্পর্কে ভালো ধারণা নিয়ে কাজটি করতে যাবেন। অন্যথায় উক্ত কাজ করতে গেলে অনেক ভুল-ত্রুটি হবে যা শেষ পর্যন্ত আপনার সফলতার পথে বড় বাঁধা হতে উঠতে পারে।
ব্লগিং কি?
এই প্রশ্নটার উত্তর আগে উত্তর দেওয়ার আগে। একটা কথা বলি কোন কাজে আসলে সহজ না কঠিন কাজকে নিজের বুদ্ধি দিয়ে সহজ করে নিতে হয়। ব্লগিং হচ্ছে লেখালেখি। সহজ কথায় যাকে বলে লেখালেখি। আরেকটু বিস্তারিত বললে ব্লগিং হলো এমন একটি মাধ্যম যা দিয়ে নিজের ভিতরের সুন্দর সৃজনশীল জ্ঞানকে লিখে সুন্দর করে উপস্থাপন করা যায়। অন্যভাবে বললে হবে, আপনার ভেতরের সৃজনশীল জ্ঞান লেখালেখির মাধ্যমে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়াকে ব্লগিং বলে।
ব্লগিং করতে কি কি লাগে ও কি কি জানতে হবে?
ব্লগিং করতে গেলে ইন্টারনেট সংযোগ অবশ্যই প্রয়োজন। কম্পিউটার হলে ভালো হয় কিন্তু স্মার্টফোন হলেই চলবে। কথায় আছে নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। আপনি যদি ব্লগিং করতে জানেন আপনার কম্পিউটার নাই ভালো স্মার্টফোন নাই এটা কোন সমস্যা হয় দাঁড়াবে না। ভাল ব্লগার হতে গেলে সুন্দর করে কোন তথ্য উপস্থাপন করার জ্ঞান থাকতে হবে । সুন্দর করে কোন কিছু লিখে উপস্থাপন করার নামই হলো ব্লগে।
কোন বিষয়ে ব্লগিং করবেন কি নিয়ে ব্লগিং করবেন?
তাহলে আপনার কিছুটা ইংরেজি জানতে হবে। এক্ষেত্রে ইংরেজিতে অনেক সুন্দর সুন্দর ব্লগ আছে যেগুলো থেকে ভালো ধারণা নিয়ে আপনি বাংলায় আপনার টপিকের উপর সুন্দর করে ব্লগিং করতে পারেন।
ব্লগিং করতে কি নিজের ওয়েবসাইট লাগে?
সাধারণত ব্লগিং করতে নিজের ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয় না কারণ অনেক ওয়েবসাইট আছে। যেগুলোতে আপনার সৃজনশীল জ্ঞান লিখে প্রকাশ করতে পারবেন। এজন্য তাদেরকে টাকা দিতে হবে না ও যদি আপনার ইচ্ছা থাকে তাহলে তা সম্ভব হবে। আর যদি চান যে আমার নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন খুব তাও ভালো। ব্লগিংয়ে মাধ্যমে নিজের ওয়েবসইট থেকে আয় করতেও পারবেন।
নিজের ওয়েবসাইট বানাতে ব্লগার ও ওয়ার্ডপ্রেস মধ্যে কোনটি ব্যবহার করবেন?
ব্লগারে ফ্রিতে ব্লগিং ওয়েবসাইট বা একাউন্ট করা যায় এক্ষেত্রে আপনাকে ব্লগারকে কোন টাকা দিতে হবে না। ব্লগার ব্যবহার করতে কোন হোস্টিং ডোমেইন এর প্রয়োজন হয় না কিন্তু আপনি চাইলে ব্লগারে আপনার নিজস্ব ডোমেইন থাকলে তা যুক্ত করতে মতে পারবেন। নতুনদের জন্য ব্লগার হল আমার মতে একটি বেস্ট ব্লগিং প্লাটফর্ম। যদি টাকা খরচ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস এ ব্লগিং করার জন্য অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পাবেন।
কিভাবে ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
ইন্টারনেটে অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে শিখতে পারবেন যে কিভাবে ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। কিভাবে ব্লগার থিম আপলোড করবেন কিভাবে ব্লগার ওয়েবসাইট ডিজাইন করবেন কিভাবে ব্লগার ব্লগে যুক্ত করবেন। ইত্যাদি সকল বিষয়ে ইউটিউবে ও গুগলে সার্চ করলে অনেক ভিডিও বা টিউটোরিয়াল পাবেন এগুলা দেখে দেখে শিখতে পারবে। আর যদি টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে ডোমেইন ও হোস্টিং প্রয়োজন হবে। এতে আপনার খরচ হবে প্রায় ৮,০০ টাকা ডোমেইন খরচ আর হোস্টিং খরচ ১২,০০০ টাকা। যদি প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করেন তো দেখা যাচ্ছে ওয়েব ডিজাইনের জন্য আপনাকে ১,০০০ থেকে ২,০০০ টাকা খরচ করতে হবে। নতুনদের বলবো ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার না করে ব্লগার ব্যবহার করুন ব্লগারের সার্ভিসটি ফ্রি হলেও এটা গুগলের একটি প্রতিষ্ঠান। এক্ষেত্রে অনেক ভাল সার্ভিস পাবেন।
ব্লগিং করে কি টাকা ইনকাম করা যায়?
হ্যা, ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা যায়। তবে আপনার প্রধান লক্ষ্য যদি থাকে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা। তাহলে আমি আপনাকে ব্লগিং এ আসতে না করব। কারণ ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা এত সহজ না। এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। অনেক ধৈর্য ধরতে হবে। যদি কষ্ট না করতে পারেন, সময় দিতে না পারেন, ধৈর্য ধরতে না পারেন না তাহলে ব্লগিং আপনার জন্য নয়। অনেক ব্লগার আছে দেখবেন যে মাসে ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা শুধু ব্লগিং করে আয় করতেছে। তারা কিন্তু ভাই প্রথম দিন থেকেই এ পরিমাণ টাকা ইনকাম করা শুরু করিনি। অনেক শ্রম, সাধনা, কষ্টের বিনিময়ে দক্ষতা অর্জন করে আজকে তারা ব্লগিং নিয়ে সফল। ব্লগিং করে সফলতা অর্জন করতে আপনাকে ঐ ধরনের কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
ব্লগিং করে ইনকাম শুরু করতে কত বছর লাগবে?
ব্লগিং শুরু করার প্রথম দিন থেকেই ইনকাম করতে পারবেন না কারণ ওই সময় আপনার খুব বেশি দুঃখ থাকবে না লেখার মান ভালো হবে না বা আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বেশি হবে না । আপনার লেখার মান ভালো হতে হতে অনেক কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হবে ব্লগ আস্তে আস্তে আপনার লেখার মান ভাল হবে আপনার লেখার অভ্যাস গড়ে উঠবে। শুরুর দিকে এ কারণে আপনার তেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইনকাম হবে। ইনকাম করতে আপনার এডসেন্স এর একাউন্ট এর প্রয়োজন হবে এই এডসেন্স একাউন্ট পেতে আপনার ওয়েবসাইটে ভালো মানের লেখা থাকতে হবে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিজিটরও টাকা লাগবে। ওয়েবসাইটের লেখাগুলো কোয়ালিটি সম্পন্ন ও সৃজনশীল হতে হবে। তবে সুন্দর করে যদি ব্লগিং করতে থাকেন আপনার ওয়েবসাইটে লেখালেখি করতে থাকেন তাহলে পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যেই বালো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এর ইনকাম করতে পারবেন।
ব্লগিং করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ বা ব্লগিংকে পেশা হিসেবে নেওয়া কি উচিত হবে?
ব্লগিংকে পেশা হিসেবে নিতে হলে আপনার ভালো লেখালেখির দক্ষতা অবশ্যই থাকতে হবে। বর্তমান সময়ে সব বিষয়ে একটা বড় প্রতিযোগিতা রয়েছে আর ব্লগিং নিয়ে অনেক কম্পিটিশন বা অনেক প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিযোগিতা করে ব্লগিং করে যেতে হবে। এ প্রতিযোগিতায় টিকতে পারলেই আপনি একজন সফল ব্লগার হতে পারবেন। অন্যথায় আপনি ফেল। এজন্য আপনার পরিশ্রম করার মানসিকতা ও ব্লগিং এ ভাল দক্ষতা থাকতে হবে।
বাংলায় ব্লগিং করে কি টাকা ইনকাম করা যায়? হ্যাঁ। বাংলা ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করা যায়। তবে বাংলা ব্লগিং করে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায় না ইংরেজির তুলনায়। ইংরেজিতে ব্লগিং করে যে পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন, দেখা যাবে তার চেয়েও অনেক কম পরিমাণ টাকা বাংলায় ব্লগিং করে ইনকাম করতে পারছেন। যদি ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আমি বলব আপনি ইংরেজিতে ব্লগিং শুরু করুন। হ্যাঁ, আর কপি পেস্ট করে ব্লগিং করা যায় না। যদি আপনার মন মানসিকতা থাকে কপি-পেস্ট করে ইংরেজিতে ব্লগিং বা লেখালেখি করবেন তাহলে ভাই ব্লগিং আপনার জন্য না। আপনার যদি শুধুমাত্র ভালো দক্ষতা ও জ্ঞান থাকে তাহলে এখানে আসেন না হলে আপনি ব্লগিং করে কিছুই করতে পারবেন না, শুধু সময় ও অর্থ ব্যয় করা ছাড়া। এই সময় অর্থ অন্য কাজে লাগালে আপনার ভালো হবে। তাই কপি পেস্ট পরিহার করে সৃজনশীল জ্ঞান বৃদ্ধি করতে কাজ করুন।
ব্লগিং জানলে কি চাকরি পাওয়া যায়?
হ্যাঁ, যদি আপনার ভাল লেখালেখির ক্ষমতা থাকে বা দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান ভালো লেখালেখির জন্য ভালো দক্ষ লোক নিয়োগ দেয়। তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনি ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে পারেন। যেমন- টেকটিউন প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ওয়েবসাইটে সম্ভবত গত বছরে ব্লগারের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল যে, তাদের ওয়েবসাইটে সুপ্রিম টিউনার নিয়োগ দেওয়া হবে। সেলারি ধরা হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা মাসে। প্রতিদিন দুটি লেখা জমা দিতে হবে। প্রতিটি লেখা তিনশত ওয়ার্ডের হতে হবে। সপ্তাহে ছয়দিন ডিউটি করতে হবে ঘরে বসে তবে শুক্রবারে অফ। তাদের অফিসে না গিয়েও এই জবটা করা সুবিধা ছিল। আমি এটা তে আবেদন করছিলাম এবং লেখার স্যাম্পল জমা দেই। সেই ব্লগিংয়ে চাকরিটা হয়ে যায়। ভালো ছিল টেকটিউন অনেক বড় একটি ওয়েবসাইট। টেকটিউন হলো বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিষয়ক নাম্বার ওয়ান ব্লগসাইট। যদিও চাকরি পেয়েছিলাম কিন্তু সময়ের অভাবে আর চাকরি করা হয়ে উঠে নি। তখন আমার নিজেরও একটি ওয়েবসাইট ছিল যেটাতে সময় দিতে হত।
এমন আরও অনেক অনেক চাকরি পাবেন। এখানে হয়তো স্যালারি টা কম, যেহেতু ওটা পার্ট টাইম জব ছিল। এ পেশায় বেশি সেলারি থাকে ফুলটাইম জবে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি। কাজ জানলে সকল পেশায় টাকা ও মূল্য আছে তা ব্লগিং হোক বা অন্য যেকোনো পেশা।
সত্তি ওসাধারন কিন্তু এই জবটা তাদের জন্য যারা বেকার থাকে বা
ReplyDeleteসত্তি ওসাধারন কিন্তু এই জবটা তাদের জন্য যারা বেকার থাকে
ReplyDeleteঅনেক কিছু শিখলাম
ReplyDelete